নওগাঁ নিউজ ডেস্কঃ আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না বরং জনগণের সাথে থেকেই উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে। রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দানের বিশাল জনসভার বক্তৃতায় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কথাগুলি বলেন। তিনি আরও বলেন ১৯৮১ সালে তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয় উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা বলেন, আমি এমন একটি দেশে ফিরে আসি, যেখানে আমার কোনো বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। জাতির পিতার খুনিদেরকে ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। সে অবস্থায় আমি দেশে ফিরে আসি শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি তারপর চেষ্টা করেছি, বাংলাদেশকে উন্নত করতে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া কেউ এদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়নি, চিন্তাও করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসেই বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে।
তিনি বলেন, এই রাজশাহীতে জাতির পিতা স্বাধীনতার পর কলকারখানা করেন। এরপর সব বন্ধ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ বন্ধ কারখানা চালু করতে কাজ করে। পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ বাঁধ করে দিয়ে সেই ভাঙন আমরা রোধ করে দেই। রাজশাহীর মানুষের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নেই, তাদের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজশাহী সবসময় অবহেলায় ছিল। আপনারা এখানে নৌকায় ভোট দিয়েছেন। আমরা উন্নয়ন করেছি। রাজশাহীতে ১০ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন করা হয়েছে এবং ৪ হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। আজ যে কাজগুলো উদ্বোধন করা হল এগুলো রাজশাহীবাসীকে আমার উপহার।
তিনি এ সময় তিনি রাজশাহীতে বেসরকারি উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল গড়ে তোলায় এগিয়ে আসার জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সেক্ষেত্রে এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভেন্যু হিসেবেও বিকশিত হতে পারবে।
বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, নৌকায় ভোট দেওয়ায় অপরাধে ফাহিমা-মহিমা-রজুফাদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই এদেশ স্বাধীন হয়েছে। নৌকায় ভোট না দিলে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হতে পারতো না। নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই জিয়াউর রহমান মেজর জেনারেল হতে পেরেছিল। অথচ সেই নৌকার প্রতি এতো ক্ষোভ কেন?
‘বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকুক এটা বিএনপি সহ্য করতে পারে না,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলেই এদেশে লুটপাট আর দুর্নীতি করে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এদেশের মানুষ শান্তিতে থাকে, ভালো থাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। আর বিএনপি কী করে? মানুষ খুন করা, অগ্নিসন্ত্রাস করা তাদের কাজ।
তিনি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে আন্দোলনের নামে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা এবং বাংলাভাইসহ সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ সৃষ্টির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি ৩ হাজার ৮০০ বাস, ২৯টি ট্রেন, লঞ্চ, প্রায় ৭০টি সরকারি অফিস, ৬টি ভূমি অফিস আন্দোলনের নামে পুড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি না, আপনারা বিবেচনা করেন, কেমন করে মানুষ জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে? এই বিএনপি-জামায়াত কীভাবে জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মেরেছে? শুধু সাধারণ মানুষ নয়, পুলিশকে পর্যন্ত কীভাবে মাটিতে ফেলে এমনভাবে পিটিয়েছে!
তিনি বলেন, যখন জিয়াউর রহমান মারা গেল, তখন দেখা গেল কী? জিয়া কিছুই রেখে যায় নাই, একটা ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া। পরে দেখা গেল, খালেদা জিয়ার সেই মূল্যবান শাড়ি (ফ্রেন্স শিফন) ফ্রান্স থেকে কিনে আনা। তারেক জিয়াদের সেই কোকো লঞ্চ, তাদের ইন্ডাস্ট্রি, এত টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে যে এখনও দেখবেন কীভাবে আয়েশি জীবনযাপন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখবেন, আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, তাতেই তারা আমাদের বিরুদ্ধে গীবত গায়, মানুষকে উসকানি দেয়। এরা দেশে লুটপাট, সন্ত্রাস এগুলোই করতে পারে। বাংলা ভাই এই রাজশাহীতে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে, আর পুলিশ তাদের পাহারা দিয়েছে। তারা সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ ছাড়া কিছু বোঝে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা এদেশের খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কমিউনিটি ক্লিনিক সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছি। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ডিগ্রির মর্যাদা দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ পায়। আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। দেশকে আমরা উন্নত করতে চাই। সূত্রঃ বাসস