1. admin@dailynaogaonnews.com : admin :
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নওগাঁয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রজেন সরকারদের আশা ও একজন ব্রজেন সরকার নওগাঁর পত্নীতলায় ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে আলোচনা সভা ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের সংবর্ধনা পেলেন ডেইলি নওগাঁ নিউজ ডট কম এর উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত নওগাঁ শহরের সরু রাস্তায় ইজিবাইকের দাপটে তীব্র যানজট, ভোগান্তিতে শহরবাসী রাজশাহী গোদাগাড়ীতে অটো ছিনতাই চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ নওগাঁর ধামইরহাটে এসএসসি পরিক্ষার্থী ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিদায় নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করলেন-প্রধানমন্ত্রী রমজান মাস জুড়ে ইফতারি বিতরণ করবেন নওগাঁর মহাদেবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ নওগাঁর পত্নীতলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষনা নওগাঁর পোরশায় গরম পানিতে নারী হত্যার অভিযোগে বৃদ্ধ আটক

নওগাঁর পত্নীতলায় গাছে গাছে শোভা ছড়াচ্ছে সজিনা ফুল

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৪৬ বার পঠিত

মাসুদ রানা,পত্নীতলা প্রতিনিধিঃ ঋতুবৈচিত্র্যের এই বাংলাদেশে একেক ঋতুতে একেক রূপ নিয়ে হাজির হয় প্রকৃতি। শীতের শেষ ও বসন্তের আগমনীতে গাছে গাছে শিমুল পলাশের সাথে সজিনা ফুলগুলো প্রকৃতিকে সাজিয়েছে আপন মহিমায়।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে সাদা ফুলের বর্ণিল সাজে সেজেছে উত্তরাঞ্চলের শষ্য ভাণ্ডার খ্যাত নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার সজিনা গাছগুলো। প্রকৃতি সেজেছে যেন তার আপন মহিমায়।

বাড়ির আনাচে-কানাচে ও রাস্তার পাশে থাকা সজিনার গাছগুলো থোকায় থোকায় সাদা ফুলে ভরে উঠেছে। মৌ মৌ করছে চারপাশ। সজিনা গাছের ডালের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফুল আর ফুল। এ সময় সজিনা গাছের পাতা ঝরে পড়ে। তাই পাতা শুন্য ডালে থোকা থোকা সাদা ফুলের শোভা দেখে সকলেই মহিত হয়।

সজিনা বিশ্বের অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি বৃক্ষ। অলৌকিক গাছ হিসেবে সজিনা পরিচিত। ইংরেজিতে সজিনার নাম ‘ড্রামস্ট্রিক’ যার অর্থ ঢোলের লাঠি। নামটি অদ্ভুত হলেও এটি অতিপ্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সবজি জাতীয় একটি উদ্ভিদ। এই সজিনা গাছ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন বাড়ির গৃহিনীরা। তারাই এই গাছ গুলো বেশী রোপণ করে আর তারা সজিনা মৌসুমে সজিনা বিক্রি করে হাতের খরচ হিসেবে অর্থ সঞ্চয় করেন।

এছারা গাছের পাতা, ফুল, ফল, ব্যাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে। সজিনার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এ গাছের অনেক গুণ থাকায়, এ গাছকে যাদুর গাছ বলা হয়। কাঁচা সবুজ পাতা রান্না করে, ভর্ত্তা করে ও বড়া ভেজে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। কাঁচায় এর ফল সবজি করে আবার পাকলে বীজ বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়।

সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। গবেষকরা সজিনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজিনা গাছকে বলা হয় মিরাক্কেল ট্রি।এটির শাক হিসেবে ব্যবহৃত পাতা ভিটামিন এ-এর এক বিশাল উৎস। সজনের পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি আছে। এতসব পুষ্টিগুণ একসাথে আছে বলেই এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারনের পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ হাজারেরও অধিক সজিনা গাছ আছে। প্রতি বাড়িতে কমপক্ষে ৩/৪ টি গাছ রয়েছে। এসব গাছ রাস্তার পাশে, বাড়ির পাশে ও ক্ষেতের আইলে, পতিত জমিতে লাগানো হয়। গাছে ফলনও বেশি হয়। যত্ন ছাড়াই এসব গাছ বেড়ে ওঠে।

বাংলাদেশে ২টি জাত আছে সজিনা ও নাজিনা। আবার সাজনের মতোই দেখতে আইখন্জনও আছে। সজিনার ফুল আসে জানুয়ারীতে আর নাজিনার ফুল আসে মার্চ মাস থেকে। তবে সব ফুল থেকে ফল হয় না। একটি থোকায় সর্বাধিক ১৫০টির মত ফুল ধরে। ফুল ৪০ সেমি. থেকে ৮০ সেমি. পর্যন্ত লম্বা হয়। ফুল ফুটার ২মাস পর ফল তোলা যায়। একটি বড় গাছে ৪০০ থেকে ৫০০ ফল ধরে। প্রতিটি ফলে ৩০-৪০টি বীজ হয়।

সাজনের কাঁচা লম্বা ফল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, পাতা খাওয়া হয় শাক হিসেবে। খরা সহিষ্ণু ও গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের একটি উদ্ভিদ। ডাল ও বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করলেও আমাদের দেশে সাধারণত ডালের মাধ্যমে বা অঙ্গজ জননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করানো হয়। গ্রীষ্মকাল বিশেষত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত ডাল রোপণের উপযুক্ত সময়।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাড়ীর আশেপাশে, রাস্তার দুপাশে, নদীর বেরীবাধে, পতিত জমিতে মওসুমের শুরুতেই ফুলে ফুলে ভরে গেছে সাজিনা গাছ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সাজিনার ভাল ফলনের আশা করছেন সাজিনা চাষীরা। আরও দেখা যায়,সম্পূর্ন বিনা পরিচর্চায় ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে কমবেশি সাজনে গাছ আছে। অনেকেই বাগানে বেড়ার খুটি হিসেবে সাজনের ডাল রোপন করে। পরে তা জীবন্ত গাছে পরিনত হয়ে সাজনে ধরা শুরু করে। রাস্তার পাশে পতিত জমিতে ডাল পুতে রেখে নিখরচায় চাষ হয়েছে অনেক সাজনে গাছ। স্থানীয়রা জানান, বহুগুনে গুনান্বিত যাদুকরি সবজি সাজিনা। ওষধি গুনাগুনেভরা, সুস্বাদু, কোনো উৎপাদন খরচ নেই, অধিক লাভজনক এবং বাজারে ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন সবজি সাজিনা। শীতের রিক্ততা কাটিয়ে এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে সাজিনা গাছ।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন , পুষ্টিগুন দিক থেকে সাজিনা অত্যান্ত উপকারী একটি সবজি। সজিনা লবণ সহিষ্ণু একটি ফসল। অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রে পরিচর্যার প্রয়োজন হলেও অনেকটা পরিচর্যা ছাড়াই সাজিনার উৎপাদন সম্ভব। সজিনা অল্প দিনেই খাওয়ার উপযোগী হয় এবং বাজারজাত করা যায়। খেতে সু-স্বাদু ও বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় সাজিনার আবাদ অত্যান্ত লাভজনক। সজিনা চাষে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে প্রতিবছর সজিনার ডাল রোপণ করা হয়।

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© All rights reserved © 2022 Daily Naogaonnews
Theme Customized By Shakil IT Park