নওগাঁ সদরে র্যাপিড একশান ব্যাটিলিয়ন (র্যাব) হেফাজতে এক সরকারী নারী কর্মচারী নিহতের ঘটনায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
উক্ত ঘটনায় বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত পুর্বক দায়ীদের চিহ্নিত করে হেফাজতে নির্যাতন ও মৃর্ত্যু (নিবারন) আইন ২০১৩ অনুযায়ী স্বচ্ছ বিচারে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহবান জানিয়েছে জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ।
র্যাব হেফাজতে একজন সরকারী নারী কর্মকর্তার মৃর্ত্যুর ঘটনাটি জাতিসংঘ ঘোষিত ও বাংলাদেশ সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক মানবাধিকারের চরম লংঘন বলে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ মনে করে।
জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ এর প্রতিষ্টাতা মহাসচিব ও বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায় যে, গত ইংরেজী ২২ মার্চ ২০২৩ বুধবার সকাল আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকার সময় নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে সাদা পোশাকধারী র্যাবের একটি দল নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী জেসমিন সুলতানাকে আটক করে।
র্যাব হেফাজতে নির্যাতনে তিনি অসুস্থ হলে তাকে বুধবার দুপুরে র্যাব সদস্যরা নওগাঁ ২৫০ শষ্যা জেনারেল হাঁসপাতালে ভর্তি করে বলে নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে। পরবর্তীতে নিহতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়।
গত শুক্রবার ২৪ মার্চ সকালে তার মৃর্ত্যু হলেও শনিবার দুপুরের পর তার লাশ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করে। নিহতের মাথায় একটি লাল আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ এর প্রতিষ্টাতা মহাসচিব ও বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত র্যাব হেফাজতে নারী সরকারী কর্মচারী নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
তিনি মনে করেন, র্যাব এর মত একটি প্রফেশানাল এলিট শ্রেনীর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে কোন ব্যক্তির মৃর্ত্যু কোনভাবে কাম্য নয়।
কোন মামলা না থাকা স্বত্ত্বেও কার স্বার্থে একজন সরকারী নারী কর্মচারীকে আটক করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে কিভাবে র্যাব হেফাজতে নারীটির মৃর্ত্য হয়েছে এবং নিহতের মাথায় লাল আঘাতের দাগের বিষয়টি দ্রূত নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা উদ্ঘাটন করার আহবান জানিয়েছে অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদে সম্পূর্ণভাবে নির্যাতন নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও বিভিন্ন সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক জনগনকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এমনকি নির্যাতনের ফলে মৃর্ত্যুর ঘটনাও ঘটছে অহরহ, যা এখনি বন্ধ হওয়া উচিত বলে শাহানূর ইসলাম মনে করেন।
অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম নিহত জেসমিন সুলতানার পরিবারকে যথেষ্ঠ নিরাপত্তা প্রদান, প্রয়োজনীয় শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা প্রদান ও যথোপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একই সাথে উক্ত ঘটনায় নিহতের পরিবার যেন ন্যায় বিচার পায় সে বিষয়ে প্রয়জনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রতি, প্রধান বিচারপতি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি উদাত্ত্ব আহ্বান জানিয়েছেন।